যারা স্মার্ট ফোন ব্যবহার করেন তাদের জন্য জরুরী ওজিফা
যারা স্মার্ট ফোন ব্যবহার করেন তাদের জন্য জরুরী ওজিফা
আজকে যে ওজিফাটির
কথা বলব সেটি এ যুগে যাদের হাতে স্মাট ফোন আছে প্রত্যেকের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ যদি
না মানেন তাহলে আপনি হতভাগা- ওজিফাটি বুঝতে হলে ২টি ঘটনা বুঝতে
হবে প্রথম ঘটনাটি হল ইমাম ইবনুল কাইয়িম রাহিমাহুল্লাহ তার কিতাবুর রুহ
গ্রন্থে একটা ঘটনা বর্ণনা করেছেন। তিনি লিখেছেন, একজন পিতা একদিন তার মৃত মেয়েকে স্বপ্নে
দেখলেন। স্বপ্নে তিনি মেয়ের কাছে জানতে চাইলেন, ‘মা, আমাকে আখিরাতের ব্যাপারে কিছু বলো।
তার মেয়ে বললো, ‘বাবা, আমাদের সামনে
খুবই গুরুতর ও কঠিন বিষয় এসে হাজির হয়েছে। আমরা দুনিয়ায় সবকিছু জানতাম ঠিক, কিন্তু মানতাম
না কিছুই। আল্লাহর কসম করে বলছি বাবা, এখানে এসে যেসব কঠিন কঠিন বিষয়ের মুখোমুখি
আমরা হচ্ছি, তা
এড়াতে আমার আমলনামায় কেবল একটা তাসবিহ অথবা দুই রাকআত সালাত যদি যোগ করা যেতো, গোটা পৃথিবী
লাভের চাইতেও তা আমার কাছে অধিক প্রিয় আর দরকারি হতো।
অর্থ্যাৎ এই জগতে আমাদের কাছে ২ রাকাত নামাজ এর মূল্য, একবার সুবহানাল্লাহ বলার
মূল্য দুনিয়ার সকল সম্পদের চেয়েও মূল্যবান মনে হচ্ছে।
আজ যারা
কবরে চলে গেছেন তাদের আমলনামা বন্ধ, কিন্তু আমরা যারা বেঁচে আছি আমাদের আমলনামা
চালু আছে, মুখে জিকির করলেই আমলনামায় নেকি লিখা হচ্ছে, ২ রাকাত নামাজ পড়লেই তা
আমলনামায় যুক্ত হচ্ছে, কিন্তু আমদের হাতে এসব আমল করার সময় নাই, আমরা সকলেই
স্মার্ট ফোনের মধ্যেই জীবনের বেশীরভাগ সময় কাটিয়ে দিচ্ছি।
আরেকটি
ঘটনা বলি তাহলে আরো সুন্দর করে আপনারা বুঝতে পারবেন। দুভাই অফিসে যাবে সকাল ৭:৩০ মিনিটে, একজন রাত ২ টা পযন্ত মোবাইলে ফেসবুক ইউটিউব চালিয়ে তারপর ঘুমালো, সকালে ৭টায় ঘুম থেকে উঠে তাড়াহুরা করে রেডি হয়ে অফিসের দিকে ছুটল, তাহাজ্জুদ দুরে থাক সে ফজরের নামাজও পড়তে পারেনি, ঘরে নাস্তাও গ্রহণ করতে পারেনি,
আবার অন্যজন এশারের পর খাবার খেয়ে কিছুক্ষন নিউজ দেখে, ফেসবুক চালিয়ে ১০টার মধ্যে ঘুমিয়ে গেল, আর রাত ৩ টায় উঠে তাহাজ্জুদ পড়ল, কোরান তেলায়াত করল, তারপর ফজরের আযান হলে ফজরের নামাজ মসজিদে পড়ল, তারপর মসজিদে বসে জিকির আযকার কুরান তেলাওয়াত করে ৬ টায় সুর্য উঠার পর ইশরাকের নামাজ পড়ে ঘরে ফিরে আসল গোসল করে নাস্তা করে আস্তেধীরে সে অফিসের দিকে রওয়ানা হয়ে গেল,
এখন আপনি হিসাব লাগান দুজনেই ৫ ঘন্টা ঘুমাল, একজনের ঘুমের সাথে আর কোন কিছুই অর্জন হলনা, আর অন্যজনের ঘুমের সাথে সাথে তাহাজ্জুদ, জিকির আযকার, কোরান তেলাওয়াত, ফজরের নামাজ, ইশরাকের নামাজ অর্জিত হল, এভাবে একজন নিজের মূল্যবান সময়কে নষ্ট করে দিন কাটায় অন্যজন নিজের সময়ের সৎ ব্যবহার করে, সময়কে সঠিকভাবে
ব্যবহারের এই এক উপকারিতা। এটা যেমন আপনার জীবনকে সহজ করবে, বাড়তি চিন্তা-টেনশান
থেকে আপনাকে মুক্ত রাখবে। আপনার কখনোই মনে হবে না যে, আপনি একজন ব্যর্থ
মানুষ কিংবা আপনার জীবনটা বড্ড জটিল। অন্যদিকে যদি সময়ের সঠিক ব্যবহার আপনি নিশ্চিত
না করতে পারেন, সময়ের
অবাধ অপচয়ে আপনি যদি অভ্যস্ত হয়ে পড়েন, আপনার জীবন ধীরে ধীরে জটিল থেকে জটিলতর
হতে শুরু করবে। নিজেকে তখন আপনার কাছে ভীষণ ব্যর্থ মানুষ বলে মনে হবে। মনে হবে, একজীবনে যা
কিছু করার ছিলো, তার
কিছুই যেন আপনার করা হচ্ছে না। মানসিকভাবে আপনি খুব বিপর্যস্ত থাকবেন।
বুখারী শরীফের ৫৯৯ নং হাদিস
يَكْرَهُ
النَّوْمَ قَبْلَهَا وَالْحَدِيثَ بَعْدَهَا،
নবী করিম (দ) ’ইশার
পূর্বে ঘুমানো এবং ইশারের পরে কথাবার্তা বলা অপছন্দ করতেন
আসুন আমরা যতদিন হায়াত আছে সে হায়াতকে সে সময়কে যথাযত কাজে লাগাই, তাহলে আমাদের ইহ জীবনও স্বার্থক ও সুখের হবে আর পরকালও হবে মুক্তির।
কোন মন্তব্য নেই