মনকে পবিত্র করার উপায়। মনের কুস্বভাব দূর রার উপায়।
মনের সুস্বভাব মনের কুস্বভাব
মনের ক্ষেতে ১০ প্রকারের ফসল ও ১০ প্রকারের আগাছা দূর করার উপায়
মনকে পবিত্র করার উপায়। মনের কুস্বভাব দূর রার উপায়।
قَدْ أَفْلَحَ مَن زَكَّاهَا
যে নিজের মনকে পবিত্র করে, সেই সফলকাম হয়। [সুরা শামস - ৯১:৯]
وَقَدْ خَابَ مَن دَسَّاهَا
এবং যে নিজের মনকে অপবিত্র করে, সে বিফল হয়। [সুরা শামস - ৯১:১০]
আমাদের শরীরে যে কাপড় থাকে এই কাপড়ে যদি প্রশ্রাব পায়খানা লাগে তাহলে আমরা কি করি? সে কাপড় ধৈৗত করে পরিস্কার করি পবিত্র করি তারপর সে কাপড় পাক হও”য়ার পর আমার পরিধান করার উপযুক্ত হ”য়, ঠিক তেমনি
আমাদের গুনাহের কারনে আমাদের মন নাপাক হয়, আর সে নাপাক মন নিয়ে কেহ জান্নাতে যেতে পারবেনা, জান্নাতে যেতে হলে তওবা করে নাপাকি দুর করে পবিত্র করতে হবে। এই কথাটা বুঝানোর জন্য আল্লাহ তায়ালা ১৪টি কসম করে তারপর আমাদেরকে বুঝিয়েছেন। পবিত্র কুরআনে এত গুলি কসম করে আল্লাহ আর কোন কিছু বঝাননি।
আল্লাহ কিসের কসম করেছেন?
وَالشَّمْسِ وَضُحَاهَا
শপথ সূর্যের ও তার কিরণের, [সুরা শামস - ৯১:১]
وَالْقَمَرِ إِذَا تَلَاهَا
শপথ চন্দ্রের যখন তা সূর্যের পশ্চাতে আসে, [সুরা শামস - ৯১:২]
وَالنَّهَارِ إِذَا جَلَّاهَا
শপথ দিবসের যখন সে সূর্যকে প্রখরভাবে প্রকাশ
করে, [সুরা শামস - ৯১:৩]
وَاللَّيْلِ إِذَا يَغْشَاهَا
শপথ রাত্রির যখন সে সূর্যকে আচ্ছাদিত করে, [সুরা শামস - ৯১:৪]
وَالسَّمَاء وَمَا بَنَاهَا
শপথ আকাশের এবং যিনি তা নির্মাণ করেছেন, তাঁর। [সুরা শামস - ৯১:৫]
وَالْأَرْضِ وَمَا طَحَاهَا
শপথ পৃথিবীর এবং যিনি তা বিস্তৃত করেছেন, তাঁর, [সুরা শামস - ৯১:৬]
وَنَفْسٍ وَمَا سَوَّاهَا
শপথ মনের এবং যিনি তা সুবিন্যস্ত করেছেন, তাঁর, [সুরা শামস - ৯১:৭]
এখানে আল্লাহ মোট ১৪টি কসম
করেছেন (১) সূর্যের কসম (২) সূর্যের আলোর কসম (৩) চন্দ্রের কসম (৪) চন্দ্রের কিরনের কসম (৫) দিনের কসম (৬) দিনের আলোর কসম (৭) রাতের কসম (৮) রাতের অন্ধকারের কসম (৯) আসমানের কসম (১০) আসমান সৃষ্টি করার কসম (১১) জমিনের কসম (১২) জমিনকে সমতল করার কসম (১৩) মনের কসম (১৪) মনকে সৃষ্টি শ্রেষ্ঠ করার
উপযোগি করার কসম খেয়েছেন।
বুঝে থাকলে বলুন? সুরা আস শামসে আল্লাহ একটা মহামূল্যবান কথা বুঝানোর জন্য কতগুলি কসম খেলেন?
১৪টি
কসম খেয়ে বলেন
فَأَلْهَمَهَا فُجُورَهَا وَتَقْوَاهَا
অতঃপর মানুষের মনের মধ্যে
গুনাহের মজা বুঝারও যোগ্যতা বা জ্ঞান দান করেছি, সাজা বুঝারও যোগ্যতা বা জ্ঞান দান
করেছি। [সুরা শামস - ৯১:৮]
যারা মজার লোভে গুনাহ করে
তাদের মন নাপাক হয়ে যায়, আর সাজার ভয়ে গুনাহ ছাড়ে
তওবা করে তাদের মন পাক পবিত্র হয়ে যায়। সে কথাটি আল্লাহ ১৪ বার কসম খেয়ে বলেন
قَدْ أَفْلَحَ مَن زَكَّاهَا
যে নিজের মনকে পবিত্র করে, সেই সফলকাম হয়। [সুরা শামস - ৯১:৯]
وَقَدْ خَابَ مَن دَسَّاهَا
এবং যে নিজের মনকে অপবিত্র করে, সে বিফল হয়। [সুরা শামস - ৯১:১০]
সফল
হবে সে যে জান্নাতে যেতে পারবে আর বিফল হবে যে জাহান্নামে যাবে, সুতরাং জান্নাতে যাওয়ার জন্য আমাদের প্রধান কাজ হল মনকে পবিত্র করতে হবে ।
মন অপবিত্র হয় মজার লোভে
গুনাহে লিপ্ত হলে, আর মন পবিত্র হয় সাজার ভয়ে
গুনাহ ত্যাগ করলে।
মনের ক্ষেতে ১০ প্রকারের ফসল ও
১০ প্রকারের আগাছ
মনের ক্ষেতে ১০ প্রকারের সু
স্বভাবের ফসল ফলাতে হয়, আর সে সব সু স্বভাবের ফসল না
ফলালে মনের ক্ষেতে ১০ প্রকারের আগাছা ফলে, সে আগাছার কারনে মানুষ গুনাহ করে,
আর
মনের ক্ষেতের আগাছ পরিস্কার করে ফেললে মানুষ আর গুনাহ করতে পারবেনা, গুনাহের সাহসেই করতে পারেনা।
আমাদের মনের ক্ষেতের সু স্বভাবের ফসলগুলিও চিনা দরকার, আর মনের ক্ষেতের আগাছাগুলিও চিনা দরকার,
#যেমন একজন কৃষককে প্রকৃত চারা ও আগাছা চিনতে হয়, চিনতে পারলে সু ফসল লাভ করতে পারে,
তেমনি
ভাবে মানুষ হিসেবেও প্রত্যেকের জানা উচিত মনের ক্ষেতের সু স্বভাব কোনটি আর কু
স্বভাব কোনটি। সুস্বভাব চিনতে পারলে আমরা তা লালন করতে পারব, আর কু স্বভাব চিনতে পারলে মন থেকে তা উপড়ে ফেলতে পারব।
মনের ক্ষেতের সু স্বভাবের ফসল
হল
১) খাওফে খোদা: আল্লাহর শাস্তির ভয়, যার মনে আল্লাহর শাস্তির ভয়ের স্বভাব থাকবে, সে চুরি করার সাহস করবেনা,
জেনা
করার সাহস করবেনা, সুদ খাওয়ার সাহস করবেনা , মিথ্যা বলার সাহস করবেনা,
মদ
খাওয়ার সাহস করবেনা।
খওফে খোদা বুঝার জন্য কয়েকটি
উদাহারণ দিই
খলিফা হযরত ওমরের ঘটনা: হযরত ওমর (রা) মরুভুমি দিয়ে কোন এক জায়গা যাচ্ছিলেন, পতিমধ্যে তার খাবার পানি শেষ হয়ে গেল, এদিকে ওমরের প্রচন্ড ক্ষিদেও পে’ল, দেখলেন মরুভুমিতে একটা রাখাল ছেলে এক পাল ছাগলের রাখালি করছেন, খলিফা উমর বললেন ভাই তোমার ছাগল থেকে দুধ দোহন করে আমাকে একটু পান করতে দাও, রাখাল ছেলে ইনি যে খলিফা উমর তা আগের থেকে জানেনা। সাধারণ মুসাফির মনে করেছে, আর বললেন ভাই মুসাফির এই ছাগলের চড়ানোর দায়িত্ব আমার এর দুধ দোহন করা দুধ
কাউকে দেয়ার মালিক আমি নই। সে জন্য আমি মালিকের অনুমতি ছাড়া তোমাকে এক ফোটা দুধও
দিতে পারবনা। হযরত ওমর (রা) মনে মনে খুশি হলেন এই ভেবে যে আমার দেশের একজন রাখাল ছেলে এত বড় আমানতদার।
এরপর হযরত ওমর সে রাখালকে
আরো একটু পরীক্ষা করার জন্য বললেন আচ্ছা তুমি আমার কাছে ১টি ছাগল বিক্রী করে দাও
তাতে তোমারও লাভ আমারও লাভ,
রাখাল
বলল আমার মালিক ছাগল গননা করে যদি ধরে ফেলে তখন কি জবাব দিব? ওমর (রা) বলেন তুমি মালিককে বলবে ১টি ছাগল বাঘে খেয়ে ফেলছে, তখন সে রাখাল খুবই রাগান্বিত হয়ে ওমরকে বলেন হে মুসাফির আপনি বলেন আমি মিথ্যা
বলে আমার মালিককে বুঝ দিব কিন্ত হাশরের ময়দানে যখন আল্লাহ আমাকে প্রশ্ন করবেন তখন
কি জবাব দিব?
একটা ছাগল বিক্রী করে টাকা
আত্মসাৎ থেকে রাখাল ছেলে কিভাবে বাঁচল?
শেষ
বিচারের ভয়, আর এটার নামই হল খওফে খোদা।
# যে ১০টা সু স্বভাব মনের ক্ষেতে ফলাতে হবে তার একটি হল কি? (খাওফ) আর এই স্বভাব যার মাঝে আছে
সে কোন গুনাহের সাহস করতে পারেনা
প্রশ্ন: বাংলাদেশের মুসলমান কি গুনাহের কাজ করে? আমার কথা বুঝে থাকলে বলুন কোন জিনিষের অভাবে?
উত্তর: (খাওফে) আল্লাহর শাস্তির ভয়ের অভাবে।
আল্লাহর শাস্তির ভয় যার অন্তরে নাই সে গুনাহ করতে ভয় করেনা, আর আল্লাহর শাস্তির ভয় যার অন্তরে আছে সে গুনাহ করতে ভয় পায়।
আরো ১টি উদাহারণ দিই শুনেন মিশরের আঙ্গুর বাগান:
মিশরের এক জমিদার এর ছিল এক
আঙ্গুর বাগান, আঙ্গুর পাকলে চোরে আঙ্গুর
চুরি করে নিয়ে যায়, সে জন্য বাগান পাহাড়া দেয়ার
জন্য একজন পাহাড়াদার নিযুক্ত করেন,
সে
দিন রাত ২৪ ঘন্টা বাগানে একটি ছোট্ট ঘর বানিয়ে থাকে। সেখানে পাহাড়াদার ও তার
স্ত্রী দুজন থাকে, একদিন সে জমিদার বাগানে এসে
পাহাড়াদারের স্ত্রীকে দেখে মনে কু খেয়াল আসল, সে তার পাহাড়াদারকে অন্য একটি কাজে বাহিরে পাঠিয়ে দিল, আর সে পাহাড়াদারের কুড়ে ঘরে ঢুকে গেল, কু মতলবে, আর পাহাড়াদারের বউকে বলল
সবগুলি দরজা জানালা বন্ধ কর,
তখন
পাহাড়াদারের বউ বলল হুজুর আমরা আপনার বেতনভোগি কমচারী, আপনার হকুম অবশ্যই পালন করতে হবে কিন্তু আমি যদিও সব দরজা জানালা বন্ধ করব
কিন্তু একটি দরজা বন্ধ করার ক্ষমতা আমার নাই মালিক বলল সেটি কোনটি, পাহাড়াদরের বউ বলে যে দরজা দিয়ে আল্লাহ তায়ালা দখেবেন সে দরজা, এই কথা শুনে মালিকের হুশ ফিরে আসল আর সে জেনা না করে তওবা করে ফিরে গেল,
বুঝে থাকলে বলুন মালিক কিসের
ভয়ে জেনা থেকে বাঁচতে পারল?
( খাওফ) আল্লাহর ভয়, আল্লাহর শাস্তির ভয়।
এক নেককার যুবক
বারবার চেরাগে হাত জ্বালাচ্ছিল
যাদের মনে আল্লাহর ভয় আছে
তারা কখনো বেগানা নারীর সাথে একাকি নিজনে বেহায়াপনায় গুনাহে লিপ্ত হতে পারেনা, এক নববধু
বিয়ের রাতে ঝরের কবলে পড়ে এক নেককার যুবকের ঘরে আশ্রয় নিলেন সে ঘরে যুবক ছাড়া আর
কেহ ছিলনা, দরবেশ
চেরাগ জ্বালিয়ে কুরআন পড়ছিল আর বার বার চেরাগে নিজের আঙ্গুল জ্বালাচ্ছিল, সকালে
নারীটি নিজের পিতার কাছে ফিরে গেল, সে ঝড়েই সে নারীর স্বামী মারা
গিয়েছিল, তাই
নিজের মেয়েকে পুনরায় যখন বিয়ে করার কথা বলল তখন সে নারী তার পিতাকে বলল আগে সে
যুবককে আমাদের ঘরে দাওয়াত দিন আর তাকে জিজ্ঞেস করুন সে রাতে সে কেন কুরআন পড়ার
মাঝে মাঝে বার বার তার হাত চেরাগে জ্বালাচ্ছিল, সে যুবককে
ডাকা হল প্রশ্ন করা হলে সে জবাব দিল, সে রাতে আপনার মেয়েটি আমার ঘরে
আশ্রয় নিল আর শয়তান আমাকে বারবার প্ররোচিত করছিল, তার দিকে
তাকাতে কিন্তু আমি সাথে সাথে আগুনে হাত দিতাম আর চিন্তা করতাম দুনিয়ার আগুন এত গরম
জাহান্নামের আগুন তো আরো ৭০ গুন তেজ যদি বেগানা নারীকে একাকি পেয়ে তার দিকে তাকাই
জাহান্নামের আগুন কিভাবে সহ্য করব? এভাবে আমি সারা রাত নিজের নফসের
সাথে জিহাদ করেছি,
শয়তানের ওয়াসওয়াসার সাথে যুদ্ধ করেছি এবং গুনাহ থেকে নিজেকে
বিরত রেখেছি। এই কথা শুনে সে নেককার যুবককে সে মেয়ের সাথে বিয়ে দিলেন। সে নেককার
যুবককে নিজের একমাত্র মেয়ের জামাতা হিসেবে কবুল করলেন এবং নিজের সমস্ত সহায় সম্পদ
তার নামে লিখে দিলেন। দেখুন কিছুক্ষণ আগেও যে লোকের ঘর ছিলনা, টাকা ছিলনা, বাড়ী
ছিলনা, ঘরে বউ ছিলনা, এই তাকওয়ার ওজিফার কারনে আল্লাহ তায়ালা তাকে এমন সম্পদ শালী
করে দিয়েছেন, বিনা খরচে বিয়ের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন এবং ধারনাতিত জায়গা থেকে রিজিক
ধন সম্পদের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। সে জন্য আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে এরশাদ করেন
আজ যে সব মুসলমান ভাই ও
বোনেরা আল্লাহর ভয় জাহান্নামের ভয় কোন কিছুকে তোয়াক্কা করেনা তাদের জন্য
আফসুস।
আর যার মনে ভয় নাই সে যা ইচ্ছা
তাই করতে পারে
নফসের গোলামিতে অন্ধ এক মেয়ের
ঘটনা ও আরদাশির বাদশা
মুহাদ্দিস
ইবনে জওজি লিখেন- আরদাশির এক বাদশা ছিল তিনি দেখতে খুবই সুন্দর ছিলেন, তিনি আশে
পাশের বেশি কিছু এলাকা দখল করেন কিন্তু একটি এলাকা তিনি দখল করতে পারেননা, আরদাশির
সে এলাকায় হামলা করতে গিয়ে একটি কেল্লার মধ্যে ফেসে গেলেন, আর সে এলাকার জিনি
বাদশা সে বাদশার এক মেয়ে ছিল, সে মেয়ে আরদাশির এর সৌন্দর্য্য দেখে তার প্রতি আসক্ত
হয়ে যায়, আর সে মেয়ে আরদাশিরকে পাওয়ার জন্য নিজের পিতাকে হত্যা করার জন্য
আরদাশিরকে সাহায্য করে, আর আরদাশিরকে বিয়ে করে, বিয়ের রাতে সে মেয়েটি বিছানায়
ঘুমাতে গিয়ে করট বদলাতে থাকে, তখন আরদাশির বলে কি ব্যপার, মেয়েটি বলে বিছানাটি ঠিক
না তাই আমার ঘুম আসছেনা, তখন আরদাশির বাতি দিয়ে দেখেন বিছানার চাদরের নিচে একটি
সুতা, আর এই সামান্য সুতার কারনে রাজকন্যার ঘুম আসেনা, মেয়েটি বলে প্রতিদিন আমার
বাবা আমার বিছানা নিজে করে দিতেন, বাজারের সবচেয়ে দামী ও সুন্দর জামাটি আমার জন্য
কিনে আনতেন, আমার বাবা কোনদিন আমার অভাব অপুরন রাখেনি, তখন আরদাশির বলেন কি বল? যে
পিতা তোমার সাথে এত সুন্দর আচরন করেছে তার সাথে তুমি কি কারনে গাদ্দারি করলে? সে
তুমি আমার সাথেও গাদ্দারি করতে পার, বলে সে নারীকে আরদাশির হত্যা করে ফেলল। মেয়েটি
নফসকে প্রাধান্য দিয়েছে তাই ধ্বংস হয়েছে।
فَلاَ تَقُل لَّهُمَا أُفٍّ وَلاَ تَنْهَرْهُمَا وَقُل لَّهُمَا قَوْلاً كَرِيمًا
বৃদ্ধ
মা বাবাকে `উহ' শব্দটিও বলো না
এবং তাদেরকে ধমক দিও না এবং বল তাদেরকে শিষ্ঠাচারপূর্ণ কথা। [সুরা বনী-ইসরাঈল - ১৭:২৩]
অনেক আল্লাহর অলি মা বাবার খেদমত করে মর্যাদা লাভ করেছেন
মা বাবার কাফের হলেও খেদমত করতে হবে পিতা মাতা শুকর হওয়ার ঘটনা-
যদি মা বাবা কাফের বা মুশরিকও হয় তবুও
তাদের সাথে সদব্যবহার করার হকুম আছে।
বনি ইসরাইলের এক বুযুগ ছিলেন তার দোয়া
কবুল হত, উনার কাছে এক
লোক দোয়া জন্য আসলেন, লোকটি বুযুর্গের
ঘরে ঢুকার সময় দেখলেন বুযুর্গের ঘরের দরজায় ২টি শুকর বাঁধা আছে, আর বুর্যুগ সে ২টি শুকরকে খাবার খাওয়াচ্ছে, সে লোক দেখে হয়রান,
আর চিন্তা করতে লাগলেন এব বড় বুর্যুগ যিনি মুস্তাজাবুদ দাওয়াত, যার দোয়া আল্লাহ তায়ালা সঙ্গে সঙ্গে কবুল করেন, কিন্তু উনি শুকর পালছেন, তাকে খাবারও খাওয়াচ্ছেন, লোকিট বুযুর্গের খেদমতে সব সমস্যার কথা বললেন আর দোয়া
করালেন, সবশেষে সে লোকটি
বুযুর্গকে প্রশ্ন করলেন হুযুর বেয়াদবী মাফ করবেন, আপনি যুগের এত বড় বুযুগ কিন্তু আপনি শুকর কেন লালন পালন
করছেন? তখন সে
বুযুর্গের চোখে পানি চলে এল তিনি বললেন এরা আমার মা বাবা তারা কাফের ছিল আর একদিন
এমন কুফুর কথা বলল আল্লাহ তাদের উপর আযাব নাজিল করলেন ফলে তারা শুকর হয়ে গেল, যেহেতু তারা আমার মা বাবা তাই আমি শুকর হওয়া সত্বেও আমি
তাদের খেদমত করে যেতে লাগলাম,
আর আমার মা বাবার খেদমতের বরকতে আল্লাহ আমাকে এই মর্যাদা দান করেছেন। সুবহানাল্লাহ
হযরত বায়েজিদ বোস্তামি, হযরত ওয়াইস আল
করনীও মায়ের খেদমত করে শ্রেষ্ঠত্ব অজন করেছেন। আমাদের যাদের মা বাবা আছে আমাদের
উচিত মা বাবার খেদমত করা, মা বাবাকে কোন ভাবেই কষ্ট না দেয়া।
ইমাম আজম
ও মায়ের হকুম
অনেক সময় মুরুব্বীরা কোন কথা বললে তা অযৌক্তিক
হলেও তা মেনে নেয়াই হল আদব। যেমন ইমাম আজম আবু হানিফার একজন সাগরেদ ছিল যিনি সুন্দর ওয়াজ
করতেন, আর তার ভক্ত ছিল ইমাম আজম এর মা, একদিন ইমাম আজম এর মা
ইমাম আজমকে বলে বেটা অমুকের কাছে গিয়ে এই মাসায়ালাটি জিজ্ঞেস করে আস, ইমাম আজম বলল মা সে আমার ছাত্র আমি মাসায়ালাটি বলি? মা
বলে না বেটা তুমি এখনও ছোট তার কাছ থেকে জেনে আস, তখন ইমাম আজম
সে সাগরেদ এর ঘরের দরজার কড়া নারল সাগরেদ ইমামকে দেখে বললেন হুজুর আপনি কেন এসেছেন
আমার কাছে খবর দিলে আমি চলে আসতাম, তখন ইমাম আজম বললেন আমার মা
তোমার ভক্ত একটি মাসায়ালা জানতে চায়, সাগরেদ মাসায়ালার সমাধান
দিতে পারেনা, তখন ইমাম আজম বলে আমি তোমাকে মাসায়ালার সমাধান বলছি
তুমি তা আমাকে বলবে আর আমি আমার মাকে গিয়ে বলব তুমি বলেছ। তাহলে আমার মা তোমার নাম শুনলে
বেশী মুতমাইন হবে। দেখুন এমনই আমাদেরও মা বাবা
যদি কোন কথা বলে যা আমাদের কাছে অযৌক্তিক লাগে কিন্তু মা বাবার সম্মানাথে সে অযৌক্তিক
কাজই করা হল আদব।
যে ৩ লোকের
ইজ্জত করল সে রবের ইজ্জত করল
আবু হুরায়রা (রা) হতে বর্ণিত হুজুর (দ) এরশাদ করেন
যে ৩ লোকের ইজ্জত করল সে রবের ইজ্জত করল। প্রশ্ন করা হল সে ৩ লোক কে? হুজুর জবাব দিলেন
(১) যে সাদা দাড়ি ওয়ালা মুমিন লোকের ইজ্জত করল,
আলেম নয়, সুফি নয়, দরবেশ
নয়, বরং মুসলমান যদি হয এবং তার দাড়ি যদি সাদা হয় তাকে ইজ্জত
করলে আল্লাহকে ইজ্জত করা হয়ে যায়।
(২)যে ন্যায়বিচারক বাদশার
ইজ্জত করল
(৩)যে কোরআনে পাকের আলেম
এর ইজজ্ত করল সে মুলত আল্লাহকে ইজ্জত করল।
তাহলে আত্মার সুস্বভাবগুলির হল
১) খাওফ- আল্লাহর
শাস্তির ভয়
২) ছবর- ধৈর্য্যধারণ করা
৩) তাওয়াক্কুল- আল্লাহর
উপর ভরসা
৪) শোকর- কৃতজ্ঞতা
৫) জিকির
৬) নবী প্রেম
৭) লোভ না করা
৮) হিংসা মুক্ত হওয়া
৯) পরোপকার করা সদা মানুষের ভালো কামনা করা
১০) শরীয়তের বিধানকে মেনে নেয়া
#তাহলে আমরা মনের সু স্বভাবের মধ্যে ১০টি
সু স্বভাব সম্পর্কে জানলাম তা হল এবার আমি মনের আগাছা বা কু স্বভাব সম্পর্কে বলব-
মনের কু স্বভাব দুর করতে হবে
আর ১০ টি কু স্ববাবের ১টি হল হুব্বুদ্দুনিয়া (দুনিয়ার মহব্বত)
আল্লাহ পাক ইরশাদ করেছেন,
وَ مَا الۡحَیٰوۃُ الدُّنۡیَاۤ اِلَّا مَتَاعُ الۡغُرُوۡرِ
অর্থ: আর দুনিয়ার জীবনটা তো ধোকার সামগ্রী ছাড়া আর কিছুই নয়। (সূরা বাকারাহ)
দুনিয়ার দৃষ্টান্ত আল্লামা রুম: নৌকা ও পানি
আল্লামা রুমি (রহ.) মছনবী
শরীফে একটি হৃদয়গ্রাহী দৃষ্টান্তের মাধ্যমে দুনিয়া বিমুখতার ব্যাপারটি বুঝিয়েছেন।
তিনি বলেন, 'মানুষের দৃষ্টান্ত
হলো নৌকার মতো। আর দুনিয়ার দৃষ্টান্ত হলো পানির মতো। নৌকার জন্য পানি এতো বেশি
প্রয়োজন যে, পানি ব্যতীত নৌকা চলতেই পারে না এবং যতক্ষণ পানি
নৌকার নীচে ও তার আশেপাশে থাকবে, ততক্ষণ তা নৌকার জন্য রহমত
স্বরূপ। কিন্তু যদি এই পানি নৌকার ভেতরে এসে যায়, তখন এই
পানিই নৌকা ডুবির (ধ্বংসের) কারণ হয়। দুনিয়ার অবস্থাও ঠিক এরকম, যতক্ষণ পর্যন্ত দুনিয়া মানুষের আশেপাশে থাকে, ততক্ষণ
তা মানুষের জন্য রহমত স্বরূপ। কিন্তু যদি এই দুনিয়া মানুষের অন্তরে প্রবেশ করে,
তাহলে এই দুনিয়াই মানুষকে ধ্বংস করে ফেলে।'
দুনিয়ার মহব্বত ত্যাগ করার
শিক্ষা হযরত আবু বকরের কাছ থেকে শিখতে হবে
- জিবরাইলের কম্বল গায়ে দিয়ে
আসার রহস্য
হযরত আবু বকর সিদ্দিক (রা) নবীর ছোহবতে থাকাকে বেশী পছন্দ করতেন তাই
তিনি ছিদ্দিক আকবর হয়েছেন। এখন নবীতো নাই তবে নবীর ওয়ারিশগন আল্লাহওয়ালাগন আছেন
তাদের সাথে বসতে হবে তাদের মজলিশে এটেন করতে হবে তাহলেই আমাদের কাছে এবাদতেত মজা
আসবে।
হযরত আবদুল্লাহ বিন
আব্বাস (রা) বর্ণনা করেন-
আল্লাহর রাসুল (দ) ফরমান জিবরাইলের মোট ৬০০ মুতির পাখা আছে
সেগুলি জিবরাইল এমন ভাবে খুলে দিল যেভাবে ময়ুর তার পাখাগুলি মেলে ধরে।
আবদুল্লাহ বিন আব্বাস বয়ান করেন জিবরীল (আ) তখন তার ২টি পাখা মেলে ধরল আর এ ২টি
পাখার মাঝে দুরত্ব এত বেশী যদি দ্রুতগামি পাখি ৫০০ বছর উড়ে তবুও এক প্রান্ত থেকে
অপর প্রান্তে পৌঁছতে পারবেনা।
একবার চিন্তা করুন জিবরাইল এমন ফেরেশতা যিনি আসমানী
মাখলুকের প্রধানমন্ত্রী।
এত বড় সম্মানিত ফেরেশতা আমার নবীর দরবারে ২৪ হাজার বার
এসেছেন। জিবরাইল হুজুরের দরবারে আসলে কখনো পুরানো কাপড় পরিধান করে আসেন,
কখনো ছেড়া কম্বল
গায়ে দিয়ে চলে আসেন।
একদিন জিবরাইল (আ) নবীজির খেদমতে আতহারে হাজির হলেন হুজুর (দ) দেখলেন জিবরাইল (আ) ২টি কম্বল জড়িয়ে আছেন। ২টি কম্বল হল ১টি
কম্বলকে ছিড়ে ১ টুকরা উপরের অংশে পরিধান করেছেন,
২য় অংশ নিচের
অংশে পরিধান করে রেখেছেন। আর সে কম্বলকে আটকানোর জন্য গাছের কাটা লাগিয়ে রেখেছেন।
যখন হুজুর (দ) জিবরাইলকে এই অবস্থায় দেখলেন তখন প্রশ্ন
কররেন (মা শানুকা এয়া জিবরিল) হে জিবরাইল তোমার এ কি অবস্থা?
জিবরাইল জবাব
দিল এয়া রাসুলাল্লাহ এটা শুধু আমার পোষাক নয় আজ আসমানের সকল মাখলুকের পোষাকই এটা।
হুজুর আবার প্রশ্ন করলেন হে জিবরাইল ফেরেশতা ও হুর গেলমানের
পোষাকতো আলিশান পোষাক হয়, কিন্তু আজ এমন পোষাকের রহস্য কি?
তখন জিবরাইল আরজ করলেন (উনজুর ইলা সিদ্দিক)
হুজুর আপনি একটু
এই দরবারের কোনে বসে থাকা আপনার আবু বকরের দিকে তাকিয়ে দেখুন। হুজুর তাকিয়ে দেখলেন
আবু বকর সিদ্দিক এক কোনায় বসে আছে কিন্তু আজ আবু বকরের গায়ে কম্বলের ২টি টুকরা আর
তাতে বোতামের জায়গায় গাছের কাঁটা লাগিয়ে রেখেছে।
হুজুর (দ) জিজ্ঞেস করলেন ও আবু বকর আজ আপনি এটা
কেমন পোষাক নিয়ে এসেছেন? আরজ করলেন এয়া রাসুলাল্লাহ!
আমার কাছে মাত্র
১ জোড়া কাপড় আছে তা আজ ধুয়ে দিয়েছি, মৌসুমের কারনে কাপড় শুকায়নি,
কিন্তু আপনার
মাহফিলে না এসে আমি থাকতে পারিনা তাই আমার ঘরের এই কম্বলটি দুই টুকরা করেছি ১টি উপরে
পরিধান করেছি ১টি নিচে পরিধান করেছি, এয়া রাসুলাল্লাহ রাস্তা দিয়ে আসার সময়
আমি বোতামের জায়গায় গাছের কাটা লাগিয়ে দিয়েছি।
জিবরাইল আরজ করল এয়া রাসুলাল্লাহ আবু বকর আপনার ভালবাসায়
মগ্ন হয়ে এই পোষক পরিধান করে যখন রওয়ানা হল তা দেখে আরশের মালিক মহান রবের খুব পছন্দ
হয়ে গেল তাই রাব্বুল আলামিন আসমানি সকল মাখলুককে আবু বকরের মত পোষাক পরিধান করার
হকুম দিয়ে দিলেন। সুবহানাল্লাহ
হযরত সালমান ফারসির সত্যের জন্য সব ত্যাগ করা
সালমান ফারসি নিজের মুখে বলেন আমার বাবা অগ্নিপূঁজারি
ছিলেন, তিনি আমাকে সারাক্ষণ ঘরে আগুন জ্বালাতে বন্ধি করে রাখতেন, একদিন আমারবাবা
অন্য জায়গায় বাড়ী বানাতে শুরু করলেন, আর সে বাড়ির কাজ দেখাশুনা করার জন্য আমাকে
পাঠালেন, আর পথিমধ্যে আমি খ্রিষ্টানদের এবাদত দেখে তাতে মুগ্ধ হয়ে গেলাম, সারাদিন
সেখানে থাকলাম তাদের কথা শুনলাম, আমার বাবা এসব জানতে পেরে আমাকে আবারঘরে বন্ধি
করে রাখল, আমি খ্রিষ্টানদের সাহায্যে আমার বাবার বন্ধি থেকে মুক্ত হয়ে একটি
ব্যবসায়ীক কাফেলার সাথে সিরিয়ায় চলে গেলাম, সেখানে একজন রাহেবের খেদমতে নিয়োজিত
থাকলাম, রাহেব মৃত্যু বরণের সময় আমাকে বলল আমি এই এলাকার মানুষের টাকা পয়সা যা
মানুষ গরীবদের জন্য দিত সব সারাজীবন জমা করেছি, এটা দেখে তার প্রতি আমার অনেক ঘৃণা
হল, তার মৃত্যু হলে আমি এলাকার লোকদেরকে তার এই কুকৃত্তির কথা জানালাম ফলে তারা
তাকে দাফন থেকে বিরত থাকল আর তার সকল সম্পদ গরিবদের মাঝে বিলি করে দির, তার স্থানে
আরো একজন রাহেব নিযুক্ত হল সে ছিল খুব ভালো,
তার সান্নিধ্যে আমি অনেক সৎ গুনাবলি শিখেছি, তাঁর সান্নিধ্যে আমি মনকে পবিত্র
করেছি, একদিন তিনি অসুস্থ হয়ে যান আর মৃত্যু পথযাত্রি হয়ে যান, তখন তিনি আমাকে তার
একজন সাথীর কাছে চলে যেতে বলেন, আর বলেন সেও আমার মতের উপর আছে বাকী সকলে গোমরাহ,
ধর্মকে পরিবর্তন করে ফেলেছে, সে রাহেব আমাকে বলল আমার মৃত্যুর পর তুমি মদিনায় চলে
যাবে সেখানে আখেরী নবী আসবে, আর তার ৩টি আলামত আমাকে বললেন, সে নবী সদকা খাবেনা,
হাদিয়া দিলে খাবে, আর পিঠে থাকবে মোহরে নবুয়ত,
আমি রাহেব এর মৃত্যুর পর কিছুদিন পর
মদিনায় একটি কাফেলার সাথে রওয়ানা হলাম, কিন্তু কাফেলার সকলে মিলে আমাকে এক
স্থানে এক ইহুদীর কাছে গোলাম বলে বিক্রী করে দিল, আমি ইহুদীর বাগানে গোলামির কাজ
করতে লাগলাম, কিন্তু আমার ফিকির ছিল শেষ নবীর সাথে সাক্ষাৎ, একদিন আমার মালিক এর
এক চাচাত ভাই মদিনা থেকে আসল সে আমাকে আমার মালিক থেকে কিনে মদিনায় নিয়ে গেল, আমি
মদিনায় এসেই আমার রাহেব মদিনা সম্পর্কে যা যা বলেছেন সব মিল পেলাম, আমি তার খেজুর
বাগানে কাজ করতাম, একদিন আমি আমার মালিক এক ব্যক্তির সাথে বলাবলি করতে শুনলাম যে
মদিনার কুবায় শেষ নবী এসেছে এ কথা শুনে আমি খুবই আপ্লুত হয়ে আমার মালিককে প্রশ্ন
করলাম কে এসেছে? আমার মালিক আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিল আর বলল তোমার কাজ তুমি কর,
আমি রাতের বেলা কুবায় চলে গেলাম আর নবীজির সামনে কিছু খেজুর পেশ করলাম আর বললাম
এগুলি সদকার খেজুর, নবীজি তা খেলেন না সাথীদেরকে খেতে দিলেন, তারপরের দিন আমি কিছু
খেজুর নিয়ে গেলাম আর নবীজিকে দিলাম আর বললাম এগুলি হল হাদিয়া তখন নবীজি তা থেকে
খেলেন ফলে আমি নবী হওয়ার যে ২টি আলামত তা বুঝে নিলাম এবার তৃতীয় আলামত মুহরে নবুয়ত
আমি দেখার জন্য নবীর পিছে পিছে হাটতে লাগলাম তখন নবীজি আমার উদ্দেশ্য বুঝতে পেরে
নিজেই পিঠের উপর থেকে কাপড় সরিয়ে দিলেন তখন আমি আবেগাপ্লুত হয়ে উপুড় হয়ে মুহরে
নবুয়তে চুমু খেলাম, আর কাঁদতে লাগলাম নবীজি আমাকে নিজের সামনে বসালেন নবীজিকে আমি
আমার সমস্ত ঘটনা বললাম, তখন নবীজি আমাকে গোলামি থেকে মুক্ত করার জন্য মালিকের সাথে
কথা বলতে বললেন, মালিক ৪০ ওকিয়া ও ৩০০ খেজুর গাছ রোপনের কথা বললেন যুদ্ধে ময়দান
থেকে একটি ডিমের মত স্বর্ণের মুর্দা আসল নবীজি তা আমাকে দিয়ে বললেন এটা তোমার
মালিককে দিবে এটা ৪০ ওকিয়া হবে, অথচ তা ছিল অতি ছোট কিন্তু আমি যখন মালিককে দিলাম
মালিক ওজন করে দেখে তা ৪০ ওকিয়ার সমান, সুবহানাল্লাহ। তারপর সাহাবীদেরকে সালমানকে
চারা দিতে বললেন কেহ ৩০টি, কেহ ২০টি এভাবে৩০০টি খেজুর চারার ব্যবস্থা হয়েগেল, এবার
নবীজি সালমানকে বললেন তুমি গর্ত করে রাখবে গর্ত করা হলে আমাকে বলবে আমি নিজ হাতে
চারাগুলি রোপন করে দিব, নবীজি কথামত নিজ হাতে ৩০০টি চারা রোপন করে দিলেন।
সুবহানাল্লাহ এবং শর্ত পুরণ হওয়ায় হযরত সালমান ফারসিকে ইহুদী আযাদ করে দিলেন
# কোন কোন বনানায় আছে হযরত আলী (রা) চারা দিলেন নবীজি রোপন
করলেন আর নবীজি বললেন পিছনে ফিরে তাকাবেনা যখন ৩০০ চারা রোপন শেষ হল পিছনে ফিরে
দেখা গেল সবগুলি চারা বড় হয়ে তাতে খেজুর ধরে পেকে আছে, সুবহানাল্লাহ
শিক্ষা: এই ঘটনায় বুঝায় যায় খ্রিষ্টান ধর্ম আছে, তবে এখন আর
সে ধর্ম গ্রন্থ ঠিক নাই
২) যারা সত্যের সন্ধ্যান করে আল্লাহ তাদেরকে সন্ধ্যান দান
করেন
৩) ইহুদী খ্রিষ্টানরা তাদের কিতাবে আখেরী নবীর ব্যপারে যা
যা পড়েছে আমাদের নবীকে তারা সে রকম পেয়েছে কিন্তু তবুও তারা নিজেদের কতৃত্ব চলে
যাওয়ার ভয়ে ইসলাম কবুল করতে পারেনি।
৪) এভাবেই সত্য ধর্ম গ্রহণের জন্য সত্যের ঠিকানা লাভের জন্য
সাহাবীদের কষ্ট থেকে আমাদের শিক্ষা নেয়া উচিত, আমরা বিনা কষ্টে যে সত্য ধর্ম
পেয়েছি সে ধর্ম আমরা কতটুকু পালন করছি?
আমরা এখন দুনিয়াদর হয়ে গেছি: নবীজি ফরমান
(সা এয়াতি যামানুন আলা উম্মাতি- ইউহিব্বুনা হামসাও ওয়া এয়ানসাওনা খামসা)
আমার উম্মতের উপর এমন যামানা আসবে তারা ৫টি জিনিষকে ভালবাসকে ৫টি জিনিষকে ভুলে যাবে।
১) (ইউহিব্বুনাদ দুনিয়া ওয়া এয়ানসাওনাল আখেরা)
দুনিয়াকে ভালবাসবে আখেরাত ভুলে যাবে
২) (ইউহিব্বুনাল মাখলুক ওয়াএয়ানসাওনাল খালেক। মাখলুককে মহব্বত করবে খালেককে ভুলে যাবে
৩) (ইউহিব্বুনাল জুনুবা ওয়া এয়ানসাওনাত তাওবা)
গুনাহ করাকে পছন্দ করবে তওবা করা ভুলে যাবে
৪) (ইউহিব্বুনাল কুসুরা ওয়া এয়ানসাওনাল মাকবারা)
মহল্লাকে মহব্বত করবে কবরকে ভুলে যাবে
৫) (ইউহিব্বুনাল মালা ওয়া এয়ানসাওনাল হিসাব)
সম্পদ পছন্দ করবে হিসাব দিতে ভুলে যাবে
আমাদের
চেষ্টা করতে হবে মনকে পবিত্র রাখার, খাওফে
খোদা অর্জন করার, মনে ভালো
অভ্যাসের চারা রোপন করার, খারাপ
অভ্যাসসমুহ মন থেকে মুছে ফেলার দুনিয়ার মহব্বত দুর করার, লোভ, হিংসা, অহংকার, রিয়া, কিনা, শত্রুতামি, প্রতিশোধ
পরায়নতার মনোভাব দূর করার। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে তৌফিক দান করুন আমিন।
কোন মন্তব্য নেই