টেনশন দূর করার দোয়া। হতাশা থেকে বাঁচার আমল।

টেনশন দূর করার দোয়া। হতাশা থেকে মুক্তির ৪টি আমল



বন্ধুরা আজকে প্রিয় নবীজির কয়েকটি হাদিস শুনাব আমল বলব যা আপনার জীবন থেকে টেনশন, ডিপ্রেশন, হতাশাকে কয়েক কোটি মাইল দুরে তাড়িয়ে দিবে

মৃত্যুর আগে তা আর আপনার কাছে এসে পৌঁছাতে পারবেনা। খুব শক্তিশালি আয়াত, হাদীস আমল আজ পেশ করব যা মুহুর্তের মধ্যে আপনাকে চাঙ্গা করে দিবে

হতাশা এমন মারাত্মক রোগ যা থেকে অনেকে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়, আপনার বন্ধুদের মধ্যে যদি কেহ রকম হতাশ হয়ে থাকে, ঋণের জন্য হতাশ, কেহ হয়ত মেয়েলি কোন ব্যপারে হতাশ

অনেকে আছে প্রেমিক প্রেমিকাকে না পেয়ে হতাশ হয়ে আত্মহত্যা করে, অথচ আপনি কি জানেন আপনার এই জীবনের দাম কাবা শরীফের চেয়ে বেশী ? কেন আত্মহত্যা করবেন?

ব্যপারে মৌলিক ৪টি আমল মনে রাখবেন, যারাই হতাশ তাদেরকে এই আমলগুলি বলে দিবেন, আর নিজে হতাশ হলে নিজেও এই আমলগুলি করবেন

নং আমল হল (জিকরুল্লাহ)  আল্লাহর জিকির করা।

الَّذِينَ آمَنُواْ وَتَطْمَئِنُّ قُلُوبُهُم بِذِكْرِ اللّهِ أَلاَ بِذِكْرِ اللّهِ تَطْمَئِنُّ الْقُلُوبُ
যারা বিশ্বাস স্থাপন করে এবং তাদের অন্তর আল্লাহর যিকির দ্বারা শান্তি লাভ করে; জেনে রাখ, আল্লাহর যিকির দ্বারাই অন্তর সমূহ শান্তি পায়। [সুরা রা - ১৩:২৮]

তাহলে আল্লাহর জিকিরের মাধ্যমে হতাশাগ্রস্থ মানুষের অন্তরে প্রশান্তি ঢেলে দিবেন স্বয়ং আল্লাহ। আপনার মনে অনেক টেনশন নামাজের পর মসজিদের কোনায় বসে যান

আর আস্তে আস্তে পড়েন সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আল্লাহু আকবার, লা হাওলা ওয়ালা কুয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ, আসতাগফিরুল্লাহ

এটাও পড়ুন: ডিপ্রেশন দুর করার ওজিফা

এক হাদিসে আছে পেরেশানি থেকে মুক্তির ঔষধ (লা হাওলা ওয়ালা কুয়্যাতা ইল্লাহ বিল্লাহ) এক বর্ণনায় আছে (আসতাগফিরুল্লাহ) অপর বর্ণনায় আছে দরুদ শরীফ হল পেরেশানি রোগের ঔষধ

সুতরাং উক্ত তসবিহ সমুহ পড়তে পড়তে দেখবেন আপনার মনটা একদম হালকা হয়ে গেছে। আবার জিকির এর মধ্যে শ্রেষ্ঠ জিকির হল কোরআন তেলাওয়াত করা

হতাশা থেকে বাঁচার ২য় আমল হল- দোয়া করা 

যেমন আল্লাহ সুরা গাফির বা সুরা মুমিন এর ৬০নং আয়াতে এরশাদ করে

وَقَالَ رَبُّكُمُ ادْعُونِي أَسْتَجِبْ لَكُمْ
তোমাদের পালনকর্তা বলেন, তোমরা আমার কাছে দোয়া কর, আমি সাড়া দেব। [সুরা মুমিন - ৪০:৬০]

সুতরাং যখই দোয়া করবেন মনে মনে চিন্তা করবেন আমার আল্লাহ আমার দোয়া শুনছেন আর তিনি ওয়াদা করেছেন আমার এই দোয়াতে তিনি সাড়া দিবেন। বিশ্বাসের সাথে দোয়া করবেন

তিরমিজি শরীফের ৩৫০৫ নং হাদিস নবীজি বলেন যখন কোন মুসলমান (লা ইলাহা ইল্লা আনতা ছুবহানাকা ইন্নি কুনতু মিনাজ জোয়ালিমিন) পড়ে দোয়া করে অবশ্যই আল্লাহ তাআলা তার দু কবুল করেন।

হতাশা টেনশনে আরো একটি দোয়া আমরা করতে পারি যা বুখারী শরীফে আসছে (আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল হাম্মি ওয়াল হাজান)

এটিও পড়ুন: ১ সেকেন্ডে বড় বড় বিপদ থেকে মুক্তির দোয়া

অর্থ্যাৎ হে আল্লাহ আমি আপনার কাছে হতাশা থেকে পেরেশানি থেকে পানাহ চাই। সুতরাং যারা বলে হতাশায় বাঁচি না তাদের জন্য আমাদের নবী কত সুন্দর দোয়া শিক্ষা দিয়েছেন

হতাশা টেনশন থেকে মুক্তির ৩য় আমল হল ধৈর্য্য।  

যেমন মুসলিম শরীফের ৭৩৯০ নং হাদিসের বর্ণনা

সুহায়ব (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ মুমিনের অবস্থা বিস্ময়কর। সকল কাজই তার জন্য কল্যাণকর।

মুমিন ছাড়া অন্য কেউ বৈশিষ্ট্য লাভ করতে পারে না। তারা সুখ-শান্তি লাভ করলে শুকর-গুজার করে 

আর অস্বচ্ছলতা বা দুঃখ-মুসীবাতে আক্রান্ত হলে সবর করে, প্রত্যেকটাই তার জন্য কল্যাণকর।

হতাশার ৪র্থ আমল হল- আল্লাহর প্রতি ভালো ধারনা রাখা

যেমন বুখারী শরীফের ৭৪০৫ নং হাদিসের বর্ণনা

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ্ ঘোষণা করেন, আমি সে রকমই, যে রকম বান্দা আমার প্রতি ধারণা রাখে।

আমি বান্দার সঙ্গে থাকি যখন সে আমাকে স্মরণ করে। যদি সে মনে মনে আমাকে স্মরণ করে; আমিও তাকে নিজে স্মরণ করি।

আর যদি সে জন-সমাবেশে আমাকে স্মরণ করে, তবে আমিও তাদের চেয়ে উত্তম সমাবেশে তাকে স্মরণ করি। 

আরো পড়ুন: প্রতিদিন ওজিফাটি পড়লে প্রতিদিন সুখবর পাবেন

যদি সে আমার দিকে এক বিঘত এগিয়ে আসে, তবে আমি তার দিকে এক হাত এগিয়ে যাই, যদি সে আমার দিকে এক হাত অগ্রসর হয়;

আমি তার দিকে দুহাত এগিয়ে যাই। আর সে যদি আমার দিকে হেঁটে আসে, আমি তার দিকে দৌড়ে যাই।

সুতরাং যদি কেহ হতাশাগ্রস্থ হয় তখন তার আল্লাহ দিকে অগ্রসর হওয়া উচিত কারন বান্দা যত আল্লাহর দিকে অগ্রসর হয় আল্লাহ তার চেয়ে বেশী রহমত নিয়ে বান্দার দিকে অগ্রসর হন

এবং সর্বশেষ কথা এই আখেরী জামানায় অকল্যাণ থেকে বাঁচার জন্য মুসলিম শরীফের ৪৬৭৮ নং এক দীর্ঘ হাদিসের সারসংক্ষেপ হল

আখেরী যুগে অকল্যাণের যুগে হযরত হুযায়ফা বিন ইয়ামানকে নবী করিম () পরামর্শ দেন মুসলিম জামাত ইমামের সাথে থাকার জন্য।

সুতরাং আমাদেরও উচিত এই যুগে বিচ্ছিন্ন না থেকে মুসলিম জামায়াতের সাথে আল্লাহ ওয়ালাদের সাথে থাকা। 

আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে সব ধরনের হতাশায়, দুশ্চিন্তায়, ডিপ্রেশনে, ভেঙ্গে না পরে, আত্মহত্যা না করে উপর্যুক্ত আমলসমুহ করার তৌফিক দান করুন আমিন।

 

কোন মন্তব্য নেই

sbayram থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.