১ মিনিটে কোটিপতি হওয়ার সুরা ইখলাসের আমল। মুজাদ্দেদ আলফেসানী ওজিফা।

 

১ মিনিটে কোটিপতি হওয়ার সুরা ইখলাসের আমল। মুজাদ্দেদ আলফেসানীর ওজিফা।

 


সুরা ইখলাছ পড়ে মুজাদ্দেদে আলফে সানি কিভাবে মাটিকে স্বর্ণ বানাতেন, বিসমিল্লাহ পড়ে পানি থেকে বিরানি বানাতেন, সে ঘটনা আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করব, সাথে সাথে অতি দরিদ্র সাহাবী ১ মিনিটের মধ্যে সুরা ইখলাসের বরকতে , কিভাবে কোটিপতি হয়ে গেলেন সে ঘটনাও বাইহাকি শরীফের হাদিসের আলোকে জানাব। আশা করি আজকের আলোচনাটি আপনাদের কাছে খুবই পছন্দ হবে

সুরা ইখলাস পবিত্র কোরআনের ১১২তম সুরা। এটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে। এর রুকু ১, আয়াত ৪। এই সুরায় তওহিদ বা আল্লাহর একত্ববাদের ঘোষণার পর আল্লাহর সন্তানসন্ততি আছে বলে যে ভ্রান্ত ধারণা করা হয়, তার প্রতিবাদ করা হয়েছে। হাদিসে আছে, একবার রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, তোমরা সবাই একত্র হয়ে যাও, আমি তোমাদের কোরআনের এক-তৃতীয়াংশ শোনাব। এরপর রাসুলুল্লাহ (সা.) সুরা ইখলাস পাঠ করলেন। (মুসলিম, তিরমিজি)

হাদিসে আরও আছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে সকাল-বিকেল সুরা ইখলাস, সুরা ফালাক ও সুরা নাস পাঠ করে, তা তাকে বালা-মুসিবত থেকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য যথেষ্ট হয়। (আবু দাউদ, তিরমিজি, নাসায়ি)

ভিডিও দেখুন>এখানে ক্লিক করুন

হজরত আয়েশা (রা.) বলেছেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বিছানায় ঘুমাতে যাওয়ার সময় তাঁর দুই হাতের তালু একত্র করে তাতে সুরা ইখলাস, সুরা ফালাক ও নাস পড়ে ফুঁ দিতেন। এরপর দুই হাতের তালু দিয়ে শরীরে যতটুকু সম্ভব হাত বুলিয়ে দিতেন। এভাবে তিনবার করতেন। (বুখারি, আবু দাউদ, তিরমিজি)

মুজাদ্দেদে আলফে সানি (রহ) একজন ভালো শিক্ষক ছিলেন, তিনি তাঁর ছাত্রদেরকে পড়া শুরু করার আগে বলতেন পানি আনতে তিনি বড় ডেক্সির ভিতর বিছমিল্লাহ বলে সুরা ইখলাছ পড়ে পানি ঢালতেন, আর উপর থেকে তা ঢেকে দিয়ে নিচে আগুন জ্বালিয়ে দিতেন। যখন দুপুর ১২টায় পড়া শেষ হত বলতেন এবার ডাকনা খোল ছাত্ররা ঢাকনা খুলে দেখত ডেক্সির ভিতর গোস্ত পোলাও তৈরী হয়ে আছে। খুশবু বের   হচ্ছে। সুবহানাল্লাহ

এক ছাত্র মুজাদ্দেদ সাহেব এর এমন কারামত দেখে বাড়ী গেল মাকে বলল মা আজ তুমি রান্না করিওনা আমি রান্না করব সে বড় একটি পাতিলে বিছমিল্লাহ বলে এখলাছ পড়ে পানি দিল উপর থেকে ঢাকনা দিয়ে নিচে আগুন জ্বালিয়ে দিল, কয়েক ঘন্টা পর ঢাকনা খুলে দেখল পাতিলে পানি ছাড়া আর কিছু নাই ছাত্রটি মুজাদ্দেস সাহেব এর কাছে গিয়ে বলে হুজুর আমি আপনার মত পোলাও রান্না করার চেষ্টা করেছি ‍কিন্তু ‍কিছুই হলনা।

আরো পড়ুন: হযরত মুয়াজ বিন জাবালকে মহানবীর শিখানো ১১টি আমল

মুজাদ্দেদ সাহেব তাকে বলল তুমি পানি আন, সে পানি আনল মুজাদ্দেস সাহেব কয়েকবার বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম পড়ে, ইখলাছ পড়ে ডেক্সিতে পানি দিলেন ডেক্সির নিচে আগুন জ্বালালেন আর ছাত্রটিকে বললেন ডেক্সির পাশে দাঁড়িয়ে থাক, ১০/১৫ মিনিট পর বলেন এবার ঢাকনা খুল ছাত্রটি ডেক্সির ঢাকনা খুলে দেখে তাতে সুস্বাধু পোলাও তৈরী হয়ে গেছে। তখণ হযরত বললেন সুরা ইখলাছ পড়লে হবেনা সুরা ইখলাছ পড়ার জন্য শেখ আহমদ এর মত মুখও লাগবে মুজাদ্দেদে আলফে সানি বলতেন আমি সে সব মুমিনদের ব্যপারে হতাশ যারা সুরা ইখলাস পাঠ করে আর তার হাতের মাটির ঢিলা স্বর্ণে পরিণত না হয় ছোট সুরাটি কোরআনের এক তৃতীয়াংশ যাতে তৌহিদের মাসায়ালা পরিপূর্ণভাবে বর্ননা করা হয়েছে।

যে সাহাবী প্রতি নামাজে এই সুরাটি পাঠ করত তাকে বলা হয়েছে এর প্রতি ভালোবাসার ফলে আল্লাহ আপনাকে জান্নাত দান করবেন

এক বেদুইন হুজুরের কাছে আসলেন আর বললেন আমাকে অহি শুনান, হুজুর (দ) তাকে সুরা ইখলাস শুনালেন তখন সে বেদুইন শ্লোগান দিতে লাগলেন নেমাল ইলাহু ইলাহুনা, ইউকবালুল এয়াসিরা ওয়া ইউতাল জাজিলা, অর্থ্যাৎ আমাদের প্রভুই একমাত্র প্রভু, তিনি সামান্যতমও কবুল করেন তার বদলায় খুব বেশী দান করেন\তখণ নবী করিম (দ) সাহাবীদেরকে বললেন এই বেদুইন সুরা এখলাছের ব্যপারে যা ভাবছে তোমরাও তা ভাচছ? মুলত বেদুইনের কথায় নবীজি খুব খুশি হলেন নবী করিম (দ) তাকে বললেন তোমার কাছে কি টাকা পয়সা আছে? সে বলল বনি সালেম  গোত্রে আমার চেয়ে গরিব আর কেহ নাই।

নবীজি সাহাবীদেরকে বললেন তাকে তোমরা দাও, সাহাবীরা তাকে ততক্ষণ দিলেন যতক্ষণ সে সন্তুষ্ট না হয়। হযরত আবদুর রহমান বিন আউফ বলেন এয়া রাসুলাল্লাহ আমার কাছে একটি উটনি আছে যা কয়েকদিনের মধ্যে বাচ্চা প্রসব করবে আমি এই বেদুইনকে সুরা এখলাছের সন্মানে আমার সে উটনিটি উপহার দিতে চাই। হুজুর বললেন হ্যাঁ অবশ্যই দাও, কেননা আমার কাছে এই মুহুর্তে জিবরাইল এসেছে আর জিবরাইল বলছেন এই বেদুইনকে আবদুর রহমান বিন আউফ উটনি উপহার দিচ্ছে, তার একটি উটনির বদলায় জান্নাতে তার জন্য ৮৭ হাজার উটনি সাজানো হচ্ছে সে বেদুইন আবদুর রহমানের উটনি নিয়ে বের হলেন আর সকল সাহাবী তার জন্য ১টি করে উটনি নিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে রইলেন

আরো পড়ুন: আবু হুরায়রা (রা) এর জীবনের বড় বড় ৫টি বরকতের দোয়া

সে বেদুইন মদীনা থেকে বের হতে হতে তার কাছে ১০০০ উট জমা হয়ে গেল।  সে বেদুইন মুলত সুরা ইখলাস শুনে বলেছিল আল্লাহ কম গ্রহণ করেন আর বদলায় অনেক বেশী দেন আর তার সে কথায় আল্লাহ এমন খুশি হলেন ফলে যে বেদুইন কিছুক্ষণ আগেও সবচেয়ে দরিদ্র ছিল সে এখন ১০০০ উটের মালিক হয়ে গেল অর্থ্যাৎ কোটিপতি হয়ে গেল- সুবহানাল্লাহ

 

قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ - اللَّهُ الصَّمَدُ - لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ - وَلَمْ يَكُن لَّهُ كُفُوًا أَحَدٌ


 কুল হুয়াল্লাহু আহাদ। আল্লাহুচ্চামাদ। লাম ইয়ালিদ ওয়া লাম ইউলাদ। ওয়া লাম ইয়াকুল্লাহু কুফুয়ান আহাদ।

অর্থ : (হে রাসুল! আপনি) বলুন, তিনিই আল্লাহ, একক। আল্লাহ অমুখাপেক্ষী। তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং কেউ তাকে জন্ম দেয়নি। আর তার সমতুল্য কেউ নেই।’ (সুরা ইখলাস)

সুরা ইখলাস দারিদ্র্যতা দূর করে দেয়। হজরত সাহল ইবন সাদ সায়েদি রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে দারিদ্র্যের অভিযোগ করল নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে বললেন যখন তুমি ঘরে যাও তখন সালাম দেবে এবং একবার সুরা ইখলাস পড়বে এ আমল করার ফলে কিছুদিনের মধ্যে তার দারিদ্র্য দূর হয়ে যায়। যে ব্যাক্তি একবার সুরা ইখলাস পাঠ করলো, সে কোরআন কারিমের এক তৃতীয়াংশ পাঠ করার সওয়াব লাভ করলো ।

যে ব্যাক্তি সুরা ইখলাস ১০ বার পাঠ করলো, আল্লাহ তাআলা নিজ কুদরতি হাতে জান্নাতের মধ্যে তার জন্য বিশেষ মর্যাদাশীল মহল তৈরি করবে।

আপনি যদি শুধু বোঝেন যে এই সুরাতে কী বলা হয়েছে, তাহলে দ্বীনের পথচলা শুরু করার মূলটা আপনি ধরতে পেরেছেন।  ফজিলত ও মর্যাদাপূর্ণ সুরা ইখলাস। আল্লাহর ভালোবাসা ও নেয়ামতে ভরপুর জান্নাতের প্রসাদ পেতে নিয়মিত সুরা ইখলাসের আমল করা জরুরি।

এতে যেমন ঈমান হবে পরিপূর্ণ তেমনি পরকালের পুরস্কার হবে সুনিশ্চিত।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সুরা ইখলাসের শিক্ষাকে ধারন করা ও সুরা ইখলাসের আমল বেশি বেশি করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

আল্লাহ তায়ালা আমাদের প্রত্যেককে এই ছোট্ট সহজ সুন্দর সুন্নত আমলটি করে উক্ত ফায়দা হাসিল করার তৌফিক দান করুন আমিন। 

কোন মন্তব্য নেই

sbayram থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.