সুরা কাহাফ এর গোপন মুজেজা। ৫টি ঘটনায় ২টি বরকতময় আমল। Surah Kahaf

 

সুরা কাহাফ এর গোপন মুজেজা। ৫টি ঘটনায় ২টি বরকতময় আমল। Surah Kahaf

 


আল্লাহ তায়ালা এ দুনিয়ায় মানুষকে ৮ টি পন্থায় পরীক্ষা করেন, (১) সন্মান দিয়ে (২) অপদস্থ করে (৩) স্বাস্থের দিক দিয়ে (৪) রোগ শোক দিয়ে

(৫) লাভ দিয়ে (৬)  ক্ষতি দিয়ে (৭) খুশি দিয়ে (৮) দুঃখ দিয়ে এই ৮ প্রকারের যে কোন একটি পরীক্ষা থাকবেই 

যেমন মানুষ হয়ত সুস্থ থাকবে অথবা অসুস্থ হবে, হয়ত সুখি হবে নতুবা দুঃখি হবে, হয়ত সন্মানিত হবে নতুনা অপমানিত হবে। হয়ত লাভবান হবে নতুবা ক্ষতিগ্রস্থ হবে।

এই ৮টি অবস্থা যা মানুষের মধ্যে অদল বদল হতে থাকে। আবার এই ৮টি অবস্থাকে ২টি অবস্থায় সংক্ষিপ্ত করা যায় আর তা হল ভালো অবস্থা নতুনা খারাপ অবস্থা।

সুতরাং আল্লাহ কখনো মানুষকে ভালো অবস্থায় রেখে পরীক্ষা করেন আবার কখনো মানুষকে খারাপ অবস্থায় রেখে পরীক্ষা করেন।

আর ভালো অবস্থায় আল্লাহ পরীক্ষা করেন বান্দা ভালো অবস্থায় থেকে আল্লাহর শোকর আদায় করে কিনা, আর খারাপ অবস্থায় আল্লাহ বান্দাকে পরীক্ষা করেন বান্দা খারাপ হালতে থেকে ধৈর্য্য ধারন করে কিনা?

সুতরাং মানুষের সামনে মোট ২টি পেপার একটি হল শোকরের পেপার আর অন্যটি হল ধৈর্য্যের পেপার।

আরো পড়ুন: ১ মিনিটে সুরা ইখলাসের আমল কোটিপতি হওয়ার আমল

খাওয়ার পর ১টি আমল ভাগ্য বদলে দিবে

রাতে ঘুম ভেঙ্গে গেলে ৩টি দোয়া অবশ্যই করুন

সুতরাং আল্লাহ কখনো বান্দাকে নেয়ামত দিয়ে পরীক্ষা করেন তখন শোকরের পেপার সামনে থাকে, আর কখনো দুঃখ কষ্ট দিয়ে পরীক্ষা করেন তখন ধৈর্য্যের পেপার সামনে থাকে।

কেহ নেয়ামত পেয়ে যদি আরাম আয়েশ ও নাফরমানিতে লেগে যায় তাহলে সে তার পরীক্ষায় ফেল হয়ে যায়আর বিপদে দুঃখে কষ্টে মানুষ যখন হতাশ হয়ে দ্বীন থেকে দুরে সরে যায়, ধৈর্য্যহারা হয়ে যায়, অভাবে পরে চুরি ডাকাতি, অপরাধে লিপ্ত হয়ে যায় তাহলে সেও ফেল হয়ে যায়, আল্লাহ তায়ালা যখন আদম (আ) কে সৃষ্টি করলেন তখন তাকেও এই ২টি বিষয়ে পরীক্ষা করেছেন প্রথমে তাকে জান্নাতে রাখলেন যাতে শোকরগুজার হয়, আর সেখানে একটি গাছের ফল খেতে নিষেধ করলেন যা ছিল ছবরের বিষয়। হযরত আদম শোকরের বিষয়ে কামিয়াব হয়ে গেলেন তবে ছবরের বিষয়ে শয়তান কসম খেয়ে ধোকা দিয়ে দিলেন

কোরআনে আছে- শয়তান কসম খেয়ে বলল আপনি এই ফল খেয়ে নিন, আর শয়তানে ধোকায় তিনি সে ফল খেয়ে ছবরের বিষয়ে কামিয়াব হতে পারলেন না

আর এর পরিণতিতে আল্লাহ তাকে জান্নাতের নেয়ামত থেকে বঞ্চিত করলেন, এবং পৃথিবীতে পাঠিয়ে দিলেন। আর আদম সন্তানদেরকে এই পৃথিবীতেই অবস্থান করতে হচ্ছে সে জন্য সুরা কাহাফে ৫টি ঘটনা আছে, এটা খুব মনযোগ দিয়ে মনে রাখার বিষয়, মধ্যের ঘটনা হল হযরত আদম (আ) এর, আর এটা সুরা কাহাফের সেন্ট্রাল ঘটনা।

আর এই ঘটনাতে আল্লাহ তায়ালা ২টি বিষয়ের আলোচনা করেছেন, আর তা হল ছবর ও শোকর। আর সুরা কাহাফে আদম (আ) এর ঘটনার আগে আরো ২টি ঘটনা বলেছেন আর তা হল সাধারণ মানুষের ঘটনা

সে ২টি ঘটনার একটি ঘটনা হল কয়েকজন যুবকের গুহার মধ্যে যাওয়ার ঘটনা, আর এই ঘটনাটি সে সাধারণ যুবকদের জন্য ছবরের পরীক্ষা ছিল। আর যুবকরা ছবরের পরীক্ষায় কামিয়াব হয়ে গেছেন।

এরপর আল্লাহ ২য় ঘটনা বয়ান করেছেন, এক সাধারণ লোকের ঘটনা যার অনেক সম্পদ ছিল, আল্লাহ তাকে সু স্বাস্থ্য দিয়েছেন, সে এসব নেয়ামত পেয়ে শোকর এর পরীক্ষার সম্মুখিন হয়েছে কিন্তু এই লোক আরাম আয়েশের মধ্যে ডুবে আল্লাহর নাফরমানিতে লেগে গেল, আর পরীক্ষায় ফেল হয়ে গেল।

এই ২ ঘটনার পর আদমের ঘটনা সুরা কাহাফের মাঝে বয়ান করা হয়েছে তার পরীক্ষা ছিল ২টি ছবর ও শুকর তিনি শুকরে পাশ হয়েছেন ছবরে পাশ করতে পারেন নি এরপর আল্লাহ তায়ালা আদম (আ) এর ঘটনার পর আরো ২টি ঘটনা বয়ান করেছেন, আর এই দুটি ঘটনা সাধারণ লোকের ঘটনা না বরং স্পেশাল ঘটনা

আদম (আ) এর ঘটনার আগে ২টি ঘটনা ছিল সাধারন মানুষের ঘটনা, আর আদম (আ) এর ঘটনার পর আরো ২টি ঘটনা বয়ান হয়েছে তা স্পেশাল ঘটনা

আর সে স্পেশাল ঘটনার প্রথমটি হল মুসা কলিমুল্লাহর ঘটনা, আর মুসা (আ) থেকেও আল্লাহ ছবরের পরীক্ষা নিয়েছেন

হযরত খিজির (আ) বলেছেন আপনি আমার কাজে ছবর করতে পারবেন না ঠিকই মুসা (আ) খিজির (আ) এর কাজে ছবর না করে প্রশ্ন করে ফেলেন তাতে তিনি কামিয়াব হতে পারলেন না

নবী করিম (দ) হাদিসে এরশাদ করেছেন যদি সেদিন মুসা (আ) খিজির (আ) এর কাজে ছবর করতেন তাহলে আমরা আরো অনেক গোপন বিষয়ে জানতে পারতাম

আর স্পেশাল ঘটনার ২য়টি হল সেকান্দর যুল করনাইন এর আর তার উপর যে পরীক্ষা হয়েছিল তা ছিল শোকরের পরীক্ষা

আল্লাহ তাঁকে সব ধরনের নেয়ামত দিয়েছেন, যে জিনিষের তার চাহিদা ছিল আল্লাহ তাকে সেটা দান করেছেন

এত বড় নেয়ামত পেলে মানুষ অহংকারী হয়ে যায়, কিন্তু সেকান্দর যুল করনাইন এর মধ্যে অহংকার ছিলনা বরং শোকর ছিল, তাই তিনি এই পরীক্ষায় পাশ করেছেন।

সুতরাং পুরা সুরা কাহাফের ৫টি ঘটনার শিক্ষা হল আমাদের জীবনে ২টি পরীক্ষা হয় একটি শুকরের অন্যটি ছবরের আর এই ঘটনায় বুঝা যায়

অনেক সময় সাধারণ মানুষও এই পরীক্ষায় পাশ হয়ে যান ফেলও করেন, অনেক সময় স্পেশাল মানুষও এই পরীক্ষায় পাশ হন ফেলও করেন।

আদম (আ) কে ২টি পরীক্ষা নিয়েছেন ছবর ও শোকরের, আর আদম সন্তান হিসেবে আমাদেরও জীবনে এই দুটি পরীক্ষার সম্মুখিন হতে হবে আর এই সময় আমাদের অবশ্যই শোকরের সময় শোকর ছবরের সময় ছবর করতে হবে তবেই আমাদের কামিয়াবি


কোন মন্তব্য নেই

sbayram থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.