বরফ বিক্রেতার সুরা আসরের ওজিফা ও হযরত মুসার যাদুকরদের ওজিফা
বরফ বিক্রেতার সুরা আসরের ওজিফা ও হযরত মুসার যাদুকরদের ওজিফা
প্রিয় বন্ধুরা
আজকে অত্যন্ত চমৎকার ২টি ওজিফা আপনাদের সাথে শেয়ার করব, ১টি ওজিফা হযরত মুসা (আ) এর যুগের
যাদুকরগন থেকে নেয়া হয়েছে, আরেকটি সুরা আসরের ওজিফা যা একজন বরফ
বিক্রেতা থেকে নেয়া হয়েছে, ২টি ওজিফাই খুবই ইন্টারেস্টিং এবং
প্রত্যেকের জীবনের সুখ শান্তি সফলতার জন্য অত্যন্ত উপকারী এই ২টি ওজিফা। তাই
আশা করব খুব গুরুত্বের সাথে আজকের ওজিফা ২টি আয়ত্ব করে নিবেন। নিজেও
করবেন অন্যকেও এ ওজিফা ২টি সম্পর্কে খরব করবেন।
এক লোক
বাজারে গিয়ে দেখে এক পাগল টাইপের বুযুগ বসে বসে কাঁদছে, লোকটি ঐ বুযুগকে প্রশ্ন
করল চাচা আপনি কাঁদছেন কেন? সে বলল আমি দেখছি এই বাজারের সকল দোকানদার এতই ব্যস্ত
আল্লাহকে ভুলে আছে, তাই তাঁদের কাছে গিয়ে আমি অনুরোধ করলাম যেন সময় থাকতে আল্লাহর
সাথে সন্ধি করে নেয়, আল্লাহ এখন তাঁদের সাথে সন্ধি করতে রাজি আছে কিন্তু কোন
দোকানদার রাজি হচ্ছে না, কয়েকদিন পর সে লোকটি দেখলে সে বুযুর্গ লোকটি এক কবরস্থানে
বসে বসে কাঁদছে, তখন লোকটি সে বুযুর্গকে প্রশ্ন করলেন চাচা আপনি আজ কবরস্থানে বসে
বসে কেন কাঁদছেন? তখন বুযুর্গ জবাব দিল সেদিন বাজারের লোকদের সাথে আল্লাহর সন্ধি
করাতে চেয়েছি সেদিন আল্লাহ সন্ধি করতে রাজি ছিল দুনিয়াদার দোকানদার রাজি ছিল না,
আজ এখানে এক দোকানদারকে কবর দেয়া হয়েছে আজ আমি চাচিছ কবরের দোকানদারের সাথে
আল্লাহর সন্ধি করাতে কিন্তু আজ দোকানদার
সন্ধি করতে রাজি হয়েছে কিন্তু আজ আল্লাহ রাজি হচ্ছে না। সুতরাং জিন্দেগী থাকতে
থাকতে আল্লাহকে রাজি করে নিতে হবে। নাহয় যখন কবরে যাবেন তখন সে সুযোগ আর বাকী
থাকবে না।
জীবনটা বরফের মত গলে গলে মানবজাতি ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে যাচ্ছে জীবনের বরফ গলে যাওয়ার আগে আগে আমাদেরকে কবরের জন্য তৈয়ারী করতে হবে। এক
আলেম বলেন আমি সুরা আসরের ইন্নাল ইনসানা লাফি খুছরিন এর সঠিক অর্থ এক বরফ
বিক্রেতার কাছে বুঝতে পেরেছি, আল্লাহ তায়ালা সুরা আছরে বলে (ওয়াল আসরে শপথ যুগের,
ইন্নাল ইনসানা লাফি খুছরিন নিশ্চয়ই মানুষ ক্ষতিগ্রস্থতায় নিপতিত। ) আলেম বলেন আমি
একদিন বাজারে যাচ্ছিলাম তখন এক বরফ বিক্রেতা ডাক দিল ও ভায়েরা (ইরহামু ইরহামু আলা মা এয়াজুকু রাছু মালি) আমার উপর
দয়া কর আমার বরফ কিনে নিয়ে যাও, আমি এমন ব্যবসায়ী যার মুলধন গলে গলে শেষ হয়ে
যাচ্ছে। কেননা বরফ এমন এক বস্তু যা গ্রাহকের জন্য অপেক্ষা করে না গলতেই থাকে, আপনি
কাপড় বিক্রী করলে আজকে কাস্টমার না হলে আগামীকাল আসবে কিন্তু বরফ এমন নয়।
যখন এই বরফ
বিক্রেতা এই কথা বলল আমার মুলধন গলে গলে নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে, তখন আমি সেখানে থেমে
গেলাম, এবং সে বরফ বিক্রেতাকে বললাম ভাই আমি ইন্নাল ইনসানা লাফি খুছরিন এর তরজুমা
আজ বুঝে ফেলেছি। যেভাবে তোমার বরফ গলে গলে নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে, ঠিক তেমনিভাবে আমার
জীবনের হায়াতও নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে। তোমার বরফ ফোটা ফোটা নিঃশেষ হচ্ছে আর আমার
জিন্দেগী প্রতিটি শ্বাস প্রশ্বাসে নিঃশেষ হচ্ছে। তুমি যদি বরফ গলার আগে কারো কাছে
টাকা পয়সা, কিংবা কোন মুল্যবান জিনিষের বিনিময়ে বিক্রী করতে পার তা তোমার কাজে
আসবে। তেমনি মানুষ যদি তাঁদের এই শ্বাস যতক্ষন চালু আছে ততক্ষন রুকু করে, সিজদা
করে, নবীর সুন্নতের উপর আমল করে, নেক আমল করে তাহলে সেটাই মানুষের কাজে আসবে। হযরত
আলী (রাঃ) বলেন বান্দার এক একটি শ্বাস হল মৃত্যুর দিকে এক একটি কদম অগ্রসর হওয়া। তাঁই
মৃত্যুর দোড় গোড়ায় পৌঁছার আগেই আমাদেরকে এই জীন্দেগীকে এই শ্বাসকে কাজে লাগাতে
হবে।
২৪ ঘন্টা
নবীর সুন্নতের অনুসরণ করতে হবে মহান আল্লাহ বলেন, وَمَا آتَاكُمُ الرَّسُوْلُ فَخُذُوْهُ وَمَا نَهَاكُمْ عَنْهُ فَانْتَهُوْا ‘রাসূল তোমাদেরকে যা দেন, তা গ্রহণ কর এবং
যা হ’তে তোমাদের
নিষেধ করেন তা হ’তে বিরত থাকো’ (হাশর ৫৯/৭)।
নবীর অনুসরণ কিভাবে করতে হয় তা সাহাবীগন আমল করে দেখিয়েছেন যেমন মুসলিম শরীফের হাদীস নং ২০৯০: হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন-
এক সাহাবী স্বর্ণের আংটি পরিধান করে আসল, হুযুর (দঃ) তাঁকে ডাকলেন তার হাত থেকে আংটিটি খুলে ছুড়ে মারলেন, হুযুর (দঃ) যখন হুজরায় তশরীফ নিয়ে গেলেন সে সাহাবীও চলে যেতে লাগল, তখন অন্য একজন বললেন হুযুর আংটি নারীদের জন্য হালাল রেখেছেন আপনি এটি উঠিয়ে নিন নিজের ঘরে কোন মহিলা থাকলে তাঁকে দিয়ে দিন, তখণ সে সাহাবী জবাব দিলেন (ওয়াল্লাহে লা আখুজুহু আবাদান) আল্লাহর কসম আমি কখনো সে আংটি উঠাবো না,
যে আংটিটি হুযুর (দঃ) ফেলে দিয়েছেন আমি কিভাবে তা তুলে নিয়ে ঘরে নিয়ে যাব?
ফতোয়া হল স্বর্ণ পুরুষের জন্য হারাম নারীর জন্য হালাল, কিন্তু সাহাবাগন সেখানে ফতোয়া দেখেনি বরং হুযুর যেটা ফেলে দিয়েছে সেটা ঘরের নারীর জন্য যদিও হালাল হয় সেটা এখন আমার তুলে নিয়ে যাওয়াটা হুযুরের প্রতি ভালবাসার বিপরীত দেখা যাচ্ছে। এমনই ছিল সাহাবাগনের ভালবাসা,
সাহাবাগন আপাদমস্তক হুযুরের অনুসরন করত আমাদেরকেও আপাদমস্তক হুযুরের অনুসরন করতে
হবে তাহলেই আমাদের ঈমানের নুর উজ্জ্বল হবে। নবীর
অনুসরনের মধ্যেই আছে দুজাহানের কল্যাণ; যেমন- আল্লাহ তায়ালা মুসা (আঃ) কে নিদেশ
দিলেন ফেরাউনকে দ্বীনের দাওয়াত দিতে, হযরত মুসা (আঃ) দ্বীনের দাওয়াত নিয়ে গেলেন
ফেরাউন মুসা (আঃ) এর দ্বীন কবুল করল না বরং ফেরাউনের নিযুক্ত যে সব যাদুকর ছিল
তারাই মুসা (আঃ) এর ধর্মের দ্বীক্ষা নিয়ে নিল, মুসা (আঃ) আল্লাহর কাছে আরজ করল হে
আমার রব আপনি আমাকে বলেছেন ফেরাউনকে দাওয়াত দিতে ফেরাউন আমার দাওয়াত কবুল করেনি
তবে তার যাদুকরগন কবুল করে নিল এর হেকমত কি? তখন আল্লাহ তায়ালা বললেন হে মুসা
ফেরাউনের দরবারে সমস্ত যাদুকর আজ তোমার মত পোষাক পরিধান করেছে তারা পোষাকের
ক্ষেত্রে তোমার অনুসরন করেছে সেটা আমার পছন্দ হয়েছে তাই আমি তাঁদেরকে হেদায়েতের
নুর দান করে দিলাম। সুতরাং আমাদেরকেও সদা সর্বদা সারা রাত দিন ২৪ ঘন্টা সারা জীবন
আপাদমস্তক নবীর সুন্নতের উপর আমল করতে হবে। তাহলে আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে বেদ্বীন,
নাস্তিক, মুরতাদ, নবীর দুষমন, অলির দুষমন হওয়া থেকে রক্ষা করবেন এবং সরল সঠিক পথে
পরিচালিত করবেন।
আমাদের ফেসবুক আইডি Facebook Link https://www.facebook.com/AllBanglaDua https://www.facebook.com/Jaalhaqu https://www.facebook.com/Karamatulauliya আমাদের অন্যান্য চ্যানেলে ভিজিট করে দেখুন আশা করি ভালো লাগবে https://www.youtube.com/@Jaalhaq https://www.youtube.com/@Allahwalamedia https://www.youtube.com/@Allbangladua
কোন মন্তব্য নেই